সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা দেশের ইতিহাসে একক অর্থবছরে সর্বোচ্চ মুনাফা। এর আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে নিট মুনাফা ছিল ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ আর্থিক হিসাবে দেখা যায়, ট্রেজারি বিল-বন্ড এবং সরকারকে প্রদত্ত ঋণের সুদ বাবদ মোট আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। সব ধরনের খরচ ও কর বাদ দিয়েই নিট মুনাফা নির্ধারণ করা হয়।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪৪৩তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই হিসাব অনুমোদন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান জানান, আগের বছরের তুলনায় এবার নিট মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, “নিট মুনাফার পুরো অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে। গত অর্থবছরে কোষাগারে জমা হয়েছিল ১০ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। এবার সেই পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে।”
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, নিট মুনাফার একটি অংশ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মৌলিক বেতনের ছয় গুণ ইনসেনটিভ বোনাস প্রদান করা হবে।
ধারাবাহিক বৃদ্ধি
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২২-২৩ অর্থবছর: নিট মুনাফা ছিল ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা।
২০২৩-২৪ অর্থবছর: বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছর: আরও বেড়ে হয়েছে ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকারি ঋণের সুদ বাবদ আয় বৃদ্ধি এবং ট্রেজারি বিল-বন্ডে উচ্চ আয়ের ফলে এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। তবে মুনাফার বড় অংশ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার ফলে সরকার রাজস্ব ঘাটতি পূরণে তাৎক্ষণিক সহায়তা পেলেও দীর্ঘমেয়াদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তারল্য ব্যবস্থাপনায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।