ফিলিস্তিনের গাজায় আবারও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সর্বশেষ হামলায় অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৫১ জন আহত হয়েছেন। তবে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া অনেককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়, হামলায় নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ। একই সময়ে আল জাজিরার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি কোয়াডকপ্টার লক্ষ্যবস্তুতে বোমা ফেলে। এতে অন্তত ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। তাদের মধ্যে অনেকেই অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
গাজার আল-আহলি হাসপাতালের একটি চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও একজন প্রাণ হারিয়েছেন।
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, অনাহারে ও অপুষ্টিতে নতুন করে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের একজন শিশু। এ নিয়ে দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭৩ জনে, যার মধ্যে ১১২ জন শিশু।
মন্ত্রণালয় জানায়, অনেক হতাহত এখনও ধ্বংসস্তূপে বা রাস্তায় পড়ে আছেন। উদ্ধারকারী দলগুলোও ইসরায়েলি বোমা হামলা এবং সরঞ্জামের অভাবে তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।
তথ্যমতে, গত ১৮ মার্চ থেকে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভঙ্গের পর ইসরায়েল নতুন করে অভিযান শুরু করেছে। এরপর থেকে ১০ হাজার ৭১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৫ হাজার ৩২৪ জন আহত হয়েছেন।
শুধু তাই নয়, মানবিক সহায়তা নিতে আসা সাধারণ মানুষের ওপরও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ধরনের হামলায় ২৪ জন নিহত এবং ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত মানবিক সহায়তা নিতে এসে ২ হাজার ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৫ হাজার ১৯৭ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হামাস যদি যুদ্ধ শেষ করার শর্তে রাজি না হয়, তবে গাজার বৃহত্তম শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ২৬৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করা হয়েছিল।