ট্রাম্পের দাবি-“চীন তাইওয়ান আক্রমণের সাহস পাবে না”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার প্রেসিডেন্সির মেয়াদে চীন তাইওয়ানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেবে না, কারণ বেইজিং ভালোভাবেই জানে এর পরিণতি কী হতে পারে।

রবিবার সিবিএসের জনপ্রিয় ৬০ মিনিটস অনুষ্ঠানে এক একচেটিয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এ কথা বলেন। গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার বৈঠকের পর এ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি।
“তিনি (শি জিনপিং) এবং তার কর্মকর্তারা বৈঠকে প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘ট্রাম্প যতদিন প্রেসিডেন্ট থাকবেন, ততদিন আমরা কিছুই করব না,’ কারণ তারা এর পরিণতি জানে”—সাংবাদিক নোরা ও’ডোনেলকে এভাবেই জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

তবে আকর্ষণীয় বিষয় হলো, দক্ষিণ কোরিয়ায় শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে তাইওয়ান প্রসঙ্গ আলোচনায়ই আসেনি। এতে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। “মানুষ একটু অবাক হয়েছিল এটা দেখে। তিনি এটা কখনো তুলেনইনি, কারণ তিনি এটা বোঝেন, এবং খুব ভালোভাবেই বোঝেন”—ট্রাম্প জানান।
যখন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, চীন যদি সত্যিই তাইওয়ান আক্রমণ করে তাহলে তিনি মার্কিন সামরিক বাহিনীকে তাইওয়ান রক্ষার নির্দেশ দেবেন কিনা—এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি ট্রাম্প। “আমি আমার গোপন পরিকল্পনা প্রকাশ করতে পারি না। যদি কিছু ঘটে, আপনি তখন জানতে পারবেন। আর তিনি (শি জিনপিং) এর উত্তর বুঝে নেন”—বলেন তিনি।

শুক্রবার ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এই সাক্ষাৎকারটি রেকর্ড করা হয়। এটি ছিল ট্রাম্পের পাঁচ বছরে ৬০ মিনিটস অনুষ্ঠানে প্রথম সাক্ষাৎকার।
তাইওয়ান বহুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের অন্যতম প্রধান উত্তেজনাপূর্ণ বিষয়। চীনা সামরিক বাহিনী তাইওয়ানের জলসীমা, আকাশসীমা এবং সাইবার স্পেসে ক্রমাগত চাপ বাড়িয়ে চলেছে। বেইজিং তাইওয়ানকে তাদের বিচ্ছিন্ন অংশ মনে করলেও ১৯৪৯ সাল থেকে দ্বীপটি নিজেকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পরিচালনা করে আসছে।

তবে ট্রাম্পের এই দাবির বিপরীতে, চীনের তাইওয়ান বিষয়ক অফিসের মুখপাত্য পেং কিংয়েন গত সপ্তাহে সতর্ক করে বলেছেন, তাইওয়ানকে নিয়ন্ত্রণে আনতে বেইজিং “একদম নিশ্চিতভাবেই” সামরিক পদক্ষেপকে উড়িয়ে দেবে না। তবে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শনিবার জানিয়েছেন, তাইওয়ানের বিষয়ে চীনের কাছে কোনো ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা নেই ওয়াশিংটনের।
ট্রাম্পের এই আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য আসলে কতটা বাস্তবসম্মত, সেটাই এখন দেখার বিষয়। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা কমবে নাকি বাড়বে, তা নির্ভর করছে আগামী মাসগুলোয় ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের পদক্ষেপের ওপর।