নাকের ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা ছত্রাকের সংক্রমণকে বলা হয় রাইনোস্পোরিডিওসিস। এমন ছত্রাক সংক্রমণ দেহের অন্যান্য অঙ্গেও হতে পারে।
ফাঙ্গাল স্পোর বা ছত্রাকের বীজাণু গরু-ছাগল, ঘোড়ার মল থেকে পুকুরের পানি ও বাতাসে ছড়ায়। ফাঙ্গাল স্পোর ছড়িয়ে পড়েছে এমন পানিতে গোসল করা বা সংক্রমিত বাতাসে শ্বাসগ্রহণের মাধ্যমে এই বীজাণু মানবদেহে প্রবেশ করে থাকে।
নাকের কোনো ক্ষতস্থান দিয়ে এ বীজাণু ছড়ায়। এই স্পোর নাকের সাবমিউকোসা অর্থাৎ নাকের ভেতরে থাকা শ্লেষ্মা ঝিল্লিতে বংশবিস্তার করে। এর মাধ্যমে গঠন করে স্পোরানজিয়া (একটি বিশেষ কোষ)। এই স্পোর জার্মিনাল স্পোরের মধ্য দিয়ে ভেঙে যায়, টিস্যুতে নিঃসরিত হয়, টিস্যুতে রিঅ্যাকটিভ হাইপারপ্লাসিয়া হয়। এটি পলিপের মতো বা টিউমারের মতো দেখতে অনেকটা স্ট্রবেরি ফলের মতো দেখায়।
লক্ষণ কী, কাদের বেশি হয়
নাকের ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে নাক বন্ধ হওয়া, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, নাকে চুলকানি, নাকে টিউমার বা পলিপের মতো (স্ট্রবেরি ফলের মতো) কিছু দেখা যাওয়া ইত্যাদি।
নাকের ছত্রাকজনিত রোগ সাধারণত পুরুষদের বেশি হয়। ১১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের এ ধরনের রোগ বেশি হতে দেখা যায়। তবে যেকোনো বয়সের পুরুষের হতে পারে। নারীরাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। নাকের ছত্রাকজনিত এই রোগ ভারতীয় উপমহাদেশে যেমন বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বেশি হয়ে থাকে।
রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা
শরীরের টিস্যু বা কোষের একটি ছোট নমুনা নিয়ে সেটি পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে (বায়োপসি) এই রোগ সহজেই নির্ণয় করা যায়। এ ছাড়া টিস্যুর সূক্ষ্ম গঠন পরীক্ষা করার (হিস্টোপ্যাথলজি) মাধ্যমেও এই রোগ হয়েছে কি না, তা জানা যায়।
পলিপের মতো দেখতে মাংসপিণ্ড এবং আশপাশের আক্রান্ত জায়গায় সম্পূর্ণ ও বিস্তৃতভাবে অস্ত্রোপচার করতে হবে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেলা স্থানটি কটারাইজেশন করতে হবে। এতে রক্তপাত কম এবং আবার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না।
সুত্রঃ . এম আলমগীর চৌধুরী, নাক–কান–গলা বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা