নিকোটিন পাউচ কারখানার অনুমোদন বাতিলের দাবিতে খুলনায় প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন

খুলনা, ৭ নভেম্বর ২০২৫:
বাংলাদেশ সংবিধান ও মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরিটি (বেজা) কর্তৃক জনস্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে “নিকোটিন পাউচ” কারখানার অনুমোদন দেওয়ার প্রতিবাদে খুলনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন। “রোগ সৃষ্টিকারী নিকোটিন পাউচ- মৃত্যু কারখানার অনুমোদন বাতিল করা হোক” এই স্লোগানে আয়োজনটি করে হেলদি সিটি ফোরাম।

প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সিয়াম-এর নির্বাহী পরিচালক এডভোকেট মাসুম বিল্লাহ, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা মারুফ রশীদ ও খান হাবিবুর রহমান, খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধি মোল্লা খায়রুল ইসলাম, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান শাকিল, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রতিনিধি মো. ইমরান মিয়া, সিএলপিএ ট্রাস্ট-এর পক্ষে কাজী মোহাম্মদ হাসিবুল হক, খুলনা সাইকেলিস্টের পক্ষে মাহাথির মোহাম্মদ অথৈ, দ্যা লিগ্যাল ডোরস-এর পক্ষে সাকিব মোহাম্মদ দিপু, “নগরের খবর”-এর পক্ষে আনিন নাঈম খান, “আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসী”-এর সরদার আবু তাহের, বিআইপি খুলনা চ্যাপ্টারের সেক্রেটারি আসিফ আহম্মেদ, বন্দরগাতি ফাউন্ডেশনের পক্ষে শেখ ওমর ফারুক কচি, নাগরিক নেতা মো. সিরাজুল ইসলাম লিটন এবং বাংলাদেশ টোবাকো কন্ট্রোল অ্যাডভোকেটসসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

বক্তারা বলেন, ‘নিকোটিন পাউচ’ তামাক কোম্পানিগুলোর নতুন নেশার ফাঁদ, যা মুখে রেখে ব্যবহার করায় দ্রুত নেশা সৃষ্টি করে এবং তরুণদের সহজেই আসক্ত করে ফেলে। এটি ধূমপানের বিকল্প হিসেবে কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, নিকোটিন পাউচ মুখ, মাড়ি, ফুসফুস, লিভার ও কিডনির ক্ষতি করে; হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় এবং কিশোরদের মস্তিষ্কের বিকাশে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতার পর ইতোমধ্যে নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, রাশিয়া, ফ্রান্সসহ ৩৪টি দেশ এই পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও এই কারখানার অনুমোদন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

২০১৬ সালে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দিয়েছিল যে দেশে নতুন কোনো তামাক কোম্পানি বা কারখানার অনুমোদন দেওয়া যাবে না, বরং বিদ্যমান কোম্পানিগুলোকে অন্য শিল্পে রূপান্তর করতে হবে। বক্তারা অভিযোগ করেন, বেজার এ অনুমোদন শুধু জনস্বাস্থ্য ও সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক দায়িত্বের পরিপন্থী নয়, বরং আপিল বিভাগের নির্দেশনারও স্পষ্ট লঙ্ঘন।

প্রতিবাদ সভায় বক্তারা আরও বলেন, সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ৩৫টি মন্ত্রণালয় অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে যৌথভাবে কাজের অঙ্গীকার করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনেও নিকোটিনজাত পণ্য নিষিদ্ধের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
তারা বলেন, “জনস্বাস্থ্য রক্ষার নামে নতুন নেশা ছড়ানোর অধিকার কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই। নিকোটিন পাউচের অনুমোদন বাতিল করে সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।”