আর মাত্র কয়েক মাস পরেই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে রাজনীতি অস্থির হয়ে ওঠায় নির্বাচনের পরিবেশও প্রশ্নের মুখে। এরই মধ্যে টানা তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনে ভারতের ভূমিকাকে নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচকদের অভিযোগ— নয়াদিল্লির সমর্থনেই শেখ হাসিনা সরকার এতদিন ক্ষমতায় টিকে ছিল। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় তারা নিজেদের প্রতীক ‘নৌকা’ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। ফলে ভারতের অবস্থান কী হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে দেশ-বিদেশে জল্পনা তুঙ্গে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য বারবার বলছে, তারা চায় বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক। তবে আওয়ামী লীগবিহীন সেই নির্বাচনকে তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক বলে মেনে নেবে কিনা— সে বিষয়ে এখনো অস্পষ্টতা রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার (আইআইসি) সম্প্রতি বাংলাদেশ নির্বাচন নিয়ে একটি আলোচনার আয়োজন করে। সেখানে ভারতের প্রভাবশালী মহলের বিশ্লেষকরা নানা মতামত তুলে ধরেন।
সাবেক আমলা ও তৃণমূল কংগ্রেসের সাবেক সাংসদ জহর সরকার মনে করেন, এই মুহূর্তে ভারতের কোনো তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। আলোচনাসভার সঞ্চালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করা এই প্রবীণ প্রশাসক বলেন,
“বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। ভোটাররা কাকে নির্বাচিত করে, সেটাই ভারতের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করবে। তাই এখন দিল্লির সবচেয়ে ভালো কৌশল হবে— অপেক্ষা করা ও দেখা।”
তাকে প্রশ্ন করা হয়, যদি নতুন সরকার ভারতের প্রতি অনুকূল না হয়, তাহলে নয়াদিল্লি কী করবে? জহর সরকার জবাবে বলেন,
“কে আসবে কে যাবে— সেটা এখনো কেউ জানে না। তাই আগে নির্বাচন হোক, তারপর দেখা যাবে সম্পর্ক কতটা বজায় রাখা যায়।”
তিনি আরও বলেন,
“এখনকার সরকার তো কেবল একটি কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট। তাদের বেশি খোঁচানোর কিছু নেই। নির্বাচনের পর মূল সরকার আসবে, তখনই নীতি নির্ধারণ করা যাবে।”
অর্থাৎ, দিল্লির কূটনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে ঘিরে এখন মূল বার্তাটি হচ্ছে— ধৈর্য ধরো, অপেক্ষা করো এবং দেখো।