শিশুদের খেলার মাঠ দখলে ক্ষমতাবান অপশক্তি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের নীরবতা-শীর্ষক আলোচনা

আধুনিক নগরায়নের ফলে শহরে বাসস্থান ও কলকারখানা অতি মাত্রায় বৃদ্ধির পাচ্ছে যার ফলে খেলাধূলা ও শরীরচর্চার পরিবেশ হ্রাস পাচ্ছে। শিশুরা খেলাধুলা ও শরীরচর্চার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাচ্ছে না। ফলে শিশুরাঘরবন্দি হয়ে পড়ছে ও বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

বাংলাদেশে প্রতি বছর ৫৭২৬০০ নাগরিক অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে, যা দেশের মোট মৃত্যুর ৬৭% এই মৃত্যুর প্রায় ২২% অকাল মৃত্যু। শহরের অধিকাংশ খেলার মাঠ দখলদার দের দখলে।দখলকৃত এসকল মাঠ দখলমুক্ত করার জন্য উচ্চ মহলের তেমন কোন ভূমিকা দেখা যায় না । খেলার মাঠ ও উন্মক্ত স্থান দখল মুক্ত না হলে শিশুরা খেলাধুলার পর্যাপ্ত জায়গা পাবে না এবং তাদের স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হবে । শিশু ও জনস্বাস্থ্য উন্নতিতে খেলাধূলা ও শরীরচর্চার পরিবেশ বৃদ্ধিতে মাঠ ও পার্ক রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এ বিষয়ের প্রেক্ষিতে ৩০ নভেম্বর ২০২৪ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সভা কক্ষে সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স (সিএলপিএ) ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন-পবা আয়োজিত ‘শিশুদের খেলার মাঠ দখলে ক্ষমতাবান অপশক্তি ও দারিত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের নীরবতা” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বারসিক, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলন, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ, মার্শাল আর্ট ফাউন্ডেশন, গ্রীনফোর্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয পরিবেশ সংসদ, পরিবেশ বীক্ষণ, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন, পুরান ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম, ও তেঁতুলতলা মাঠ বাঁচাও আন্দোলন প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, শহীদ তাজ উদ্দিন স্মৃতি পার্কসহ সকল মাঠ পার্ক হতে অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।মাঠ ও পার্কে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং প্লান অনুসারে খেলার মাঠ ও পার্কে রূপান্তর করতে হবে। মাঠটি নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে, এটা কমিউনিটির মাঠ। ক্লাবের কোচিং মাঠ করা যাবে না। মাঠ দখল করে ক্লাবের ব্যবসার স্বার্থে অবৈধ ফুটবল টার্ফ অপসারণ করতে হবে। পার্কের গেটে “সকল নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত” সাইন বোর্ডে কথাটি লিখতে হবে এবং অভিযোগ করার নম্বর দিতে হবে।মাঠ দখলকারীদের মামলা মোকাবেলা করার জন্য আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে।মাঠ দখল রোধে সোসাইটিসমূহকে দায়িত্ব প্রদান এবং অস্থায়ী আনসার নিয়োগ করা দরকার। প্রতিটি মাঠে রাজউক কর্তৃক “নাগরিকদের মাঠ, সকলের জন্য উন্মুক্ত” সাইন বোর্ড স্থাপন করা প্রয়োজন ।মাঠ হতে সকল ক্লাব উচ্ছেদ করতে হবে।

সভাপতি বলেন:

রাজউক একটা উদ্দোগ নিয়েছে “এসো কোন কোন পদক্ষেপ নেওয়া যায়” যেটা সল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী , এবং দির্ঘমেয়াদী হতে পারে এবং একটা কমিটি নিয়োগ করেছে তা খুব শীর্ঘয় বাস্তাবায়ন হবে এবং কার্যক্রম শু্রু করবে। কোন কোন মাঠগুলো দখল হয়ে আছে সেগুলোর একটা তালিকা তৈরী করা এবং দখলমুক্ত কার। একটি সামাজিক মাধ্যমে গ্রুপ তৈরী করা এবং সবার মধ্যে জনপ্রিয় করা যেখানে শিশুর অভিভাবক বাবা,মা, ভাই বোন সকলে সম্পকৃত থাকতে পারে এবং তার পরিধি ৩ বা ৪ লাখ হতে পারে। সম্মলিতভাবে সকলে উদ্দোগ গ্রহনে করে অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবো এবং যারা এই অপশক্তি চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থ্যা গ্রহন করতে হবে। বর্তমানে আমাদের যে ব্যবহারযোগ্য মাঠ গুলো আছে তা একটা সুন্দর ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং প্রতিটি স্কুল কলেজের মাঠগুলো উন্মুক্ত রাখার ব্যবস্থ্যা করা।

সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আ ফ ম সারোয়ার, কনসালটেন্ট, সি এল পি এ, আমিনুল ইসলাম বকুল,হেড অব প্রোগ্রাম সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স (সিএলপিএ ) ও সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সেক্রেটারি, সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স (সিএলপিএ )। এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন সৈয়দা রত্না, তৈতুলতালা মাঠ বাচাঁও আন্দোলন, হাফিজুর রহমান ময়না, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ) এবং সভাপতি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ডা. লেলিন চেীধুরী, (সভাপতি ও কার্যকরি সম্পাদক)। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ, কনস্যালটেন্ট, সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স (সিএলপিএ)। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক, জনাব মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।