এফসিটিসি’র আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন ও কঠোর বাস্তবায়ন জরুরী


 

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ও রোগের প্রধান কারণ। ডব্লিউএইচও এফসিটিসির ২০ বছর উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের আয়োজনে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বেলা ৩টায় রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এফসিটিসি বাস্তবায়নে সিভিল সোসাইটির ভূমিকা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন বক্তারা।

বক্তারা আরো বলেন-‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তামাক একটি বড় বাধা, তাই এফসিটিসি’র যথাযথ বাস্তবায়ন এবং এতে সিভিল সোসাইটির অংশগ্রহণ ছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন সম্ভব নয়। এফসিটিসি’র যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে এর আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন ও কঠোর বাস্তবায়নও অত্যন্ত জরুরী।

আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সভায় বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস-এর সিনিয়র টেকনিক্যাল এ্যাডভাইজার সৈয়দ মাহবুবুল আলম ও টেকনিক্যাল এ্যাডভাইজার আমিনুল ইসলাম সুজন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল হেলাল আহমেদ, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মো: মোখলেছুর রহমান, তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প সমন্বয়কারী মো: শরিফুল ইসলাম, আহ্ছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিংয়ের সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা।

এ সময় বক্তারা এফসিটিসির শুরু ২০০৩ সাল থেকে অদ্যাবধি এফসিটিসি প্রনয়ণ, পর্যালোচনা ও বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সিভিল সোসাইটির যে অনবদ্য ভূমিকা ও অবদান ছিল তার স্মৃতিচারণ করেন। সেই সাথে এফসিটিসির আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রনয়ণে সরকারকে মোবিলাইজ করার ক্ষেত্রেও সিভিল সোসাইটির অংশগ্রহণ অনস্বীকার্য।

এ সময় ইকবাল মাসুদ বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (ডব্লিউএইচও এফসিটিসি) কার্যকর হওয়ার ২০ বছর পূর্ণ করেছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা প্রথম আলোচিত এবং দ্রুত জাতিসংঘের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। এফসিটিসির এই চুক্তিতে ১৮৩ টি দেশ স্বাক্ষর ও অনুস্বাক্ষর করে চুক্তিগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে “তামাক সেবন, নিকোটিন আসক্তি এবং পরোক্ষ ধূমপান নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

বাংলাদেশে ১৫ বছর ও তদুর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫.৩ শতাংশ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে, পঙ্গুত্ববরণ করে বছরে প্রায় ৪ লাখ মানুষ, পরোক্ষ ধূমপানে শিকার ৪২.৭ শতাংশ।

বক্তারা আরো বলেন, তামাকপণ্যের প্রচার ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হলেও আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের অভাব, তামাক কোম্পানির কূটকৌশল ও চটকদার বিজ্ঞাপনের ফলে, তামাকের প্রতি আসক্ত হচ্ছে দেশের তরুণরা। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উচিত তামাক কোম্পানির ছোবল থেকে ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুরক্ষা প্রদান করা এবং তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন আইন শক্তিশালী করা এবং এর কঠোর প্রয়োগ