বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার পলায়ন মানেই ৮০ পার্সেন্ট (শতাংশ) সংস্কার হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা পালিয়েছেন, তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরাও পালিয়েছেন। তাঁদের বিচার হবে। বিচার এক দিনের ব্যাপার না। বছরের পর বছর লাগবে। এখন সংস্কার ও বিচার বিচার করে ফেনা তুললে হবে না। নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। নইলে আমরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে অনুরোধ জানাব, দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি দিন।’
শনিবার(৫ এপ্রিল) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর পার্কে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী ও সমাবেশে বক্তব্য এ কথা বলেন হারুনুর রশীদ। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করবেন না। আপনাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। উপদেষ্টাদের দিয়ে নতুন দল হয়েছে। নতুন দল গঠনের প্রয়োজন ছিল না। আগে বিচার ও সংস্কার বলে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার প্রচেষ্টা জাতি মানবে না।’
সাবেক এই সংসদ সদস্য জামায়াতের স্থানীয় নেতাদের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতির পদ তারা দখল করেছে। কোরআন তাফসির মাহফিলের নামে রাজনৈতিক সমাবেশ করছে।’
হারুনুর রশীদ আরও বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে পদ্মা নদীর বাঁধ তৈরি হয়েছে। সে বাঁধের গোড়া থেকে গত সাত দিন শত শত ট্রাক ভিড়িয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে বাঁধ হুমকির মুখে পড়ছে। অবৈধভাবে এ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে ডিসি, এসপি কার্যালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
জেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপি নেত্রী সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক তসিকুল ইসলাম প্রমুখ।
জামায়াতের সমালোচনা করে সৈয়দ আশিফা আশরাফি পাপিয়া বলেন, ‘তাদের কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই। তারা নারী নেতৃত্ব নাজায়েজ বলে। পাকিস্তান আমলে নির্বাচনে ফাতেমা জিন্নাহকে সমর্থন করেছিল। শেখ হাসিনার সঙ্গে জোট বেঁধে এরশাদের আমলে ১৯৮৬ সালে নির্বাচন করেছিল। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে যোগ দিয়ে তাদের দুইজন মন্ত্রী হয়েছিল। একসময় দেখতাম, নির্বাচনী পোস্টারে প্রতীক আছে, কিন্তু প্রার্থীর ছবি নেই। তারা তখন ছবি প্রকাশ করাকে নাজায়েজ বলেছিল। এখন তারা ছবি ছাপিয়ে প্রচার করছে। ইসলামী ব্যাংক ছিনতাই হয়েছে। একজন প্রার্থীর ভাই ইসলামী ব্যাংক ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। সেই ছিনতাইয়ের টাকা দিয়ে রমজানে কাউকে পাঞ্জাবি, কাউকে খেজুর, কাউকে সেমাই, চিনি, পোশাকসহ বিভিন্ন কিছু দিয়ে বেড়িয়েছে। এটা জায়েজ হবে?’