বিদ্যমান সংবিধান মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া। তাই নতুন করে সংবিধান লেখার পক্ষে নয় গণফোরাম। তবে জন–আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করার পক্ষে দলটি।
শনিবার(১০ মে) বিকেলে জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে দলটির পক্ষ থেকে এ অবস্থান জানানো হয়। দলটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে সভাপতি পরিষদের সদস্য সুব্রত চৌধুরী, এ কে এম জগলুল হায়দারসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেন।
অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী শপথ নিয়েছে উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাংবিধানিক সরকারের অধীনে রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের সংবিধান সংশোধন করতে হলে জাতীয় সংসদ ব্যতিরেকে বর্তমান কাঠামোতে সম্ভব নয়।’
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য চায় গণফোরাম। দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের সংবিধানে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেটা প্রয়োগের ফলেই তিনি স্বৈরশাসক হয়েছেন এবং একচ্ছত্র রাষ্ট্রের পুরো মালিকানা তাঁর হাতে চলে গেছে।’
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দিয়েছে গণফোরাম। তবে এমন সরকারের মেয়াদ ১২০ দিনের পরিবর্তে আগের মতোই ৯০ দিন রাখার পক্ষে তারা।
১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান ছিলেন গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি কামাল হোসেন। দলটি তাঁকে সংবিধানের প্রণেতা বলে দাবি করে। মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা সংবিধান সংস্কার কমিশনকে বলেছিলেন, জন–আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করা যাবে। তবে সেটা অবশ্যই জাতীয় সংসদের মাধ্যমে করা সমীচীন, এ ছাড়া কোনো সুযোগ নেই।’
সরকারপ্রধান ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি থাকতে পারবে না বলে মত দিয়েছে গণফোরাম। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন বলে মত তাদের। একজনের সর্বোচ্চ দুবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পক্ষে তারা। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে দলটি আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশের নাম পরিবর্তনে তারা একমত নয়। গণপরিষদ নির্বাচনও সমর্থন করে না তারা।