চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যু, আতঙ্কে এলাকাবাসী

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় বিষাক্ত চোলাই মদপানে এ পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
মৃতদের পরিচয়
পুলিশের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, মৃতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র গ্রামের লাল্টু (৪৫), শহীদ মোল্লা (৫০), ছমির উদ্দীন (৫৫), খাজুরা গ্রামের সেলিম (৩৮), পিরোজখালি পূর্ব পাড়ার লালটু (৩৮) এবং খেদের আলী (৫৫)। মৃতদের সবাই ছিলেন দিনমজুর ও শ্রমিক।
ঘটনার বিবরণ
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান জানান, গত ১০ অক্টোবর ডিঙ্গেদহ এলাকার এক গোপন স্থানে ১০ থেকে ১২ জন মিলে চোলাই মদপান করেন। পরদিন ১১ অক্টোবর তিনজনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়।
এরপর রবিবার রাতে আরও তিনজন মদপানে অসুস্থ হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে মারা যান। বর্তমানে একজন সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে।
মৃত্যুর কারণ
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের জানান, প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী অ্যালকোহলিক পয়জনিং বা বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে পুরোপুরি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৃতদের চারজনকে ইতিমধ্যে দাফন করা হয়েছে। বাকি দুজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই বাজার এলাকায় অবৈধভাবে দেশি চোলাই মদের ব্যবসা চলছে। প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন।
চলমান তদন্ত
ওসি খালেদুর রহমান জানান, ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এদিকে, মদ সরবরাহকারী ও বিক্রেতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। মৃত শ্রমিকদের পরিবারগুলো এখন চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত এই অবৈধ মদ ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।