খুলনায় বোমা ও গুলির হামলায় শিক্ষক নিহত, বিএনপি নেতা আহত

খুলনায় রবিবার রাতে বিএনপি নেতার অফিসে আচমকা বোমা ও গুলির হামলার ঘটনায় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ইমদাদুল হক (৫৫) বছিতলা নূরানী হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন । এ ঘটনায় আরও তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

রবিবার রাত ৯টার দিকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আইটি গেট সংলগ্ন স্থানীয় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এই হামলা সংঘটিত হয় । আহতদের মধ্যে রয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫), বেল্লাল খান (৫৫) ও মিজানুর রহমান (৫৮) । গুরুতর আহত মামুন শেখ ও বেল্লাল খানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সেদিন সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য মামুন শেখ তার অফিসে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে বসে ছিলেন। সেই সময় শিক্ষক ইমদাদুল হকসহ কয়েকজন একটি মাহফিলের জন্য আর্থিক সহযোগিতা চাইতে সেখানে যান । রাত ৯টার দিকে হামলাকারীরা অফিসে প্রথমে দুটি বোমা নিক্ষেপ করে, এরপর চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে দাঁড়ানো ইমদাদুল হকের শরীরে বিদ্ধ হয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় । রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমদাদুল হককে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছেলে অনিক আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “মাহফিলের টাকা সংগ্রহে গিয়ে আমার বাবা মারা গেছেন। তিনি এলাকার মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানুষ ছিলেন। আব্বুর স্বপ্ন ছিল আমি ডাক্তার হব” ।

আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার জানান, “মামুন শেখ প্রায়ই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আড্ডা দেন। রাত ৯টার দিকে কতিপয় দুর্বৃত্ত তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়” । তিনি জানান, হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ ।
ঘটনার পর পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ জানায়, তারা সকল সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে এবং কুয়েট ক্যাম্পাসসহ আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ।
খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।