কেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম আমরা।

২৪ এর ৫ আগস্ট গণ-আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র সংস্কার ও পুনর্গঠনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন নতুন নেতৃত্বের অধীনে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। গণতন্ত্র, সুশাসন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশটি এক নতুন পরিচয় তৈরি করছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, জুলাইয়ের আন্দোলনে গণহত্যাকারী খুনি হাসিনা এবং তার দোসররা এখনও সক্রিয় রয়েছেন। তারা দেশের মধ্যে একটি অশান্তি সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড করছে। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের হলুদ মিডিয়ার উপর ভর করে আওয়ামী লীগ দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আমাদের প্রত্যাশা ছিলো- অন্তর্বতীকালীন সরকার সবার আগে আওয়ামী ষড়যন্ত্রের বিষদাঁত ভেঙ্গে দিবে। কিন্তু সরকারের কঠোরতার অভাবে আওয়ামীলীগ চোখ রাঙ্গানির সাহস পাচ্ছে। অপরাধের সাথে জড়িত আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের ব্যক্তিদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করা আমাদের একটা বড় চাওয়া।
জুলাই বিপ্লবে হাজার হাজার মানুষ শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছেন এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম- সরকার দ্রুতই আহতদের উন্নতমানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু আজ যখন দেখি আহত ভাই-বোনেরা সুচিকিৎসার জন্য আন্দোলন করে তখন হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে যায়।
স্বপ্ন দেখেছিলাম- বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ হবে বৈষম্যমুক্ত, হয়রানিমুক্ত। কিন্তু এখনও মানুষকে নানাভাবে বৈষম্য আর হয়রানির শিকার হতে হয়। আমরা চাই- সরকারের যথযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে সমাজে বিরজিত সমস্ত বৈষম্য এবং হয়রানি দূর হোক।
আমরা আরও চেয়েছিলাম- দেশের সকল শ্রেণীর মানুষ তাদের সমস্ত চাহিদা প্রয়োজন অনুযায়ী পাবে। কিন্তু অসাধু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যা সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টের কারণ। সরকারের কাছে জোর দাবী- তারা যেনো বিদ্যমান সকল সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে দ্রব্যমূল্যকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসে।
সর্বোপরি, হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হোক- এটাই এখন আমাদের স্বপ্ন।


মিনহাজুল আবেদীন সম্পদ
শিক্ষার্থী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রতিনিধি,
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন,
খুলনা বিভাগ।