রাজধানীতে সিনেমার মতো স্বর্ণচুরি: মালিবাগের শম্পা জুয়েলার্স থেকে উধাও ৫০০ ভরি সোনা!

রাজধানীর মালিবাগে ঘটে গেছে এক ভয়াবহ স্বর্ণচুরির ঘটনা। বুধবার (৮ অক্টোবর) গভীর রাতে ফরচুন শপিং মলের ভেতরে অবস্থিত ‘শম্পা জুয়েলার্স’ নামের দোকানটি থেকে প্রায় ৫০০ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন দোকানের মালিক।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত ও প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন।

সিসিটিভিতে ধরা বোরকাপরা দুই চোর
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ৩টার দিকে চোরচক্রের দুই সদস্য বোরকা পরে ফরচুন শপিং মলে প্রবেশ করে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, তারা নিখুঁত পরিকল্পনায় দোকানের শাটারের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে এবং মুহূর্তের মধ্যেই বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ লুট করে নিয়ে যায়।

মালিকের দাবি: সবকিছুই লুটে নিয়েছে চোরচক্র
শম্পা জুয়েলার্সের মালিক জানান, দোকানে প্রায় ৪০০ ভরির মতো স্বর্ণালংকার সাজানো ছিল, পাশাপাশি ১০০ ভরি বন্ধকী সোনা ও ৪০ হাজার টাকার মতো নগদ অর্থ রাখা ছিল। সব মিলিয়ে দোকানের প্রায় সব সম্পদই চোরেরা নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, “প্রতিদিনের মতো বুধবার রাত ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় যাই। ভোরে মার্কেটের দারোয়ানের ফোন পেয়ে ছুটে এসে দেখি দোকানের সবকিছু খালি। একটাও জিনিস অবশিষ্ট নেই।”

তদন্তে পুলিশ ও সিআইডি
রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাজহারুল ইসলাম বলেন, “মালিকের অভিযোগ অনুযায়ী, দোকান থেকে প্রায় ৫০০ ভরি সোনা চুরি হয়েছে। আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। ইতিমধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, চুরির ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে আশপাশের সড়ক ও মার্কেটের অন্যান্য সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে “।

চেইন চুরির ইঙ্গিত?
উল্লেখ্য, এর মাত্র কয়েকদিন আগেই, গত রোববার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আরেকটি জুয়েলারি দোকানের দেয়াল কেটে ১২৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও প্রায় তিন লাখ টাকা চুরি হয়। পুলিশ মনে করছে, সাম্প্রতিক এই দুই ঘটনার মধ্যে কোনো সংগঠিত স্বর্ণচোরচক্রের যোগসূত্র থাকতে পারে।

রাজধানীর নিরাপত্তা ও ব্যবসায়ীদের উদ্বেগও এখন তুঙ্গে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরপর একাধিক জুয়েলারি দোকানে বড় ধরনের চুরি তাদের আতঙ্কিত করে তুলেছে।

এক ব্যবসায়ী বলেন,

এভাবে পরিকল্পিতভাবে দোকান ভেঙে স্বর্ণ চুরি হচ্ছে, অথচ নিরাপত্তা নেই। পুলিশ যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।”
ঘটনাটি এখনো তদন্তাধীন।
পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ফরচুন শপিং মলের আশপাশে নজরদারি বাড়িয়েছে এবং স্বর্ণচোরচক্রকে ধরতে অভিযান শুরু করেছে।