খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (খুমেক) অনুমতি ছাড়া সংবাদ সংগ্রহে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতাল পরিচালক ডা. কাজী মো. আইনুল ইসলাম এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা জারি করেন।
আদেশে বলা হয়েছে, পরিচালকের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো সাংবাদিক হাসপাতালের ইনডোর বা আউটডোর ওয়ার্ডে প্রবেশ করে ছবি তুলতে বা সাক্ষাৎকার নিতে পারবেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কিছু মিডিয়াকর্মী অনুমতি ছাড়া ঢুকে রোগীদের ছবি তুলছেন, যা রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের জন্য বিব্রতকর এবং চিকিৎসাসেবা ব্যাহত করছে।
৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি রোগী সেবা নিতে আসেন। প্রশাসনের বক্তব্য, সাংবাদিকদের অবাধ আনাগোনায় চিকিৎসা কার্যক্রমে বিলম্ব ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।
তবে এই নিষেধাজ্ঞাকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত বলে মনে করছেন খুলনার সাংবাদিকরা। তাদের দাবি, “সাংবাদিকরা জনগণের চোখ ও কান। অনুমতি ছাড়া সংবাদ সংগ্রহে বাধা মানে অনিয়ম চাপা দেওয়ার চেষ্টা।” তারা অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি খুমেক হাসপাতালে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে বকশিশ না পেয়ে ক্লিনারের অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ায় রোগীর মৃত্যু, ডাক্তারের ধমকে রোগী স্বজনের মৃত্যু, রান্নাঘর থেকে খাবার পাচার এবং দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যের মতো গুরুতর অভিযোগ। এসব ঘটনার পর হাসপাতাল প্রশাসন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে হাসপাতাল পরিচালক ডা. কাজী মো. আইনুল ইসলাম বলেন, “সাংবাদিকদের অবাধ চলাচলের কারণে স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ঢাকাসহ দেশের অনেক মেডিকেল কলেজেই এই নিয়ম আছে। সব চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এই নির্দেশনার পর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও চিকিৎসা খাতে জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সাংবাদিক নেতারা বলছেন, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রকাশের পথ রুদ্ধ করতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে রোগীদের গোপনীয়তা ও সেবা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ।