ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০০৫ (সংশোধনী-২০১৩) বাস্তবায়ন বিষয়ক বিভাগীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভা আজ সোমবার খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) দেবপ্রসাদ পাল।
সভাপতি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ কারণে পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপান বন্ধ, উৎপাদন, ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। তিনি মোবাইলকোর্ট পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পার্ক এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর একশ মিটারের মধ্যে কোনো দোকানে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রির সুযোগ থাকা উচিত নয়। এছাড়া, সকল পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে দৃশ্যমান স্থানে “নো স্মোকিং” সাইনেজ স্থাপন করার নির্দেশনা দেন তিনি।
সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) আবু সায়েদ মোঃ মনজুর আলম, বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক অনিন্দিতা রায়, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. অর্পণা বিশ্বাস, বিআরটিএ পরিচালক মোঃ জিয়াউর রহমান, রেন্জ ডিআিইজির প্রতিনিধি,কেএমপির প্রতিনিধি,মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের প্রতিনিধি,তথ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এইড ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি, কাজী মোহাম্মদ হাসিবুল হক।
সভায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের প্রতিনিধি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সিয়ামের নিবাহী পরিচালক বলেন,বাংলাদেশের সংবিধানে জনস্বাস্থ্য রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। আবার সরকারের মধ্যে েএখন অবধি তামাক কোম্পানীর শেয়ার আছে। এ কারনেই তামাক কোম্পানী আইন ভংঙ্গের দুঃসাহস করে থাকে। এটি স্পষ্টই কমপ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। সে কারনে সরকারের মধ্যে থাকা তামাক কোম্পানীর শেয়ার অতি সত্তর বাতিল করতে হবে।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে দেশে ৩০ বছরের অধিক বয়সীদের মধ্যে ৭০ লাখের বেশি মানুষ তামাকজনিত নানা রোগে ভুগছেন, যার মধ্যে ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ দীর্ঘমেয়াদী জটিল রোগে আক্রান্ত। পরোক্ষ ধূমপানের শিকার শিশুদের সংখ্যাও উদ্বেগজনক—৬১ হাজারেরও বেশি শিশু ঘরোয়া পরিবেশে ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাবে আক্রান্ত হয় এবং ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৪ লাখ ৩৫ হাজার শিশু তামাকজনিত নানা রোগে ভুগছে।
আইন অনুযায়ী, পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপান করলে ৩০০ টাকা জরিমানা, পুনরায় করলে দ্বিগুণ জরিমানা আদায় করা হবে। নিষিদ্ধ বিজ্ঞাপন প্রদানে তিন মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অটোমেটিক ভেন্ডিং মেশিন ব্যবহারে একই দণ্ড এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে তামাক বিক্রিতে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। ধূমপানমুক্ত এলাকায় ধূমপান করলে ৫০০ টাকা জরিমানার বিধানও রয়েছে।
সভায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি ও টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।