ঢাকার ফুটপাত ও সড়কগুলো পথচারীদের জন্য নিরাপদ করা হবে

– ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এর বানী

প্রিয় নগরবাসী, আসসালামু আলাইকুম।

জাতিসংঘ ঘোষিত ৮ম বৈশ্বিক সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ, ১২ থেকে ১৮ মে ২০২৫ উপলক্ষে আপনাদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। বিশ্বজুড়ে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সড়কে অকালমৃত্যু কমিয়ে আনার লক্ষ্যে জাতিসংঘ প্রতি দু’বছর পর সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করে থাকে।

এবার সপ্তাহটির প্রতিপাদ্য- জীবনের জন্য সড়ক: হাঁটা ও সাইকেল চালানো নিরাপদ করা—আমাদের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর ঢাকায় দিনের বেলায় যানজট একটি মারাত্মক সমস্যা এবং এ কারণে দৈনিক ৮২ লক্ষ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। এক্ষেত্রে স্বল্প দূরত্বে যাওয়ার জন্য হাঁটা ও সাইকেল চালানো একটি ভালো সমাধান হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন পথচারী ও সাইকেলবান্ধব নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো, যা আমাদের নগরীতে অপ্রতুল। অন্যদিকে, সকাল ও রাতে বা বন্ধের দিনে অতিরিক্ত গতি সড়ককে অনিরাপদ করে তোলে। গতির কারণে পথচারীদের সড়ক পারাপার ও সাইকেল চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্য গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা অনুযায়ী সড়কগুলোতে গতিসীমার মধ্যে গাড়ি চালানোর জন্য সকল চালকদের অনুরোধ জানাই।

আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) আন্তর্জাতিক সংস্থা ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটির (বিআইজিআরএস) সাথে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে সড়ক নিরাপত্তায় বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসাবে ডিএনসিসি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ – ডিএমপি’র সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ও মোড়গুলো চিহ্নিত করছে। ডিএমপির সঙ্গে যৌথভাবে ‘ঢাকা উত্তরের সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতি’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, ডিএনসিসি’র আওতাধীন সড়কে ২০২৩ সালে সড়কে চলাচল করতে গিয়ে ১২৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন যাদের ৬১ শতাংশ পথচারী, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

ডিএনসিসি’র আওতাধীন ফুটপাথ ও সড়কে পথচারী ও সাইকেল চালকদের জন্য নিরাপদ করতে কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড মোড়টি সংস্কার করে পথচারীবান্ধব করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য মোড় ও সড়ক পারাপার এবং ফুটপাথ পথচারীদের জন্য নিরাপদ করা হবে।

পাশাপাশি নগরবাসী ও গাড়ি চালকদের সচেতনভাবে সড়কে চলাচলের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। অনুগ্রহ করে ট্রাফিক নিয়ম-কানুন মেনে চলুন। মনে রাখবেন, যত্রতত্র সড়ক পারাপার না হয়ে নির্দিষ্ট স্থানে সড়ক পারাপার হলে ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। পাশাপাশি চালকদেরও নিয়ন্ত্রিত গতিতে ও সচেতনভাবে গাড়ি চালানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। সড়কে নির্ধারিত গতিসীমা মেনে চলুন, নগরীর সড়কগুলোকে নিরাপদ রাখুন।

পরিশেষে বলতে চাই, সড়কে অকালমৃত্যু শুধু ব্যক্তি নয়, বরং একটি পরিবার, সমাজ ও বৃহৎ পরিসরে রাষ্ট্রের উন্নয়নের অন্তরায়। তাই, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

আসুন, আমরা একসাথে ঢাকার সড়কগুলোকে নিরাপদ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই।