মাঠ-পার্ক দখলদারের সাথে চুক্তি, ডিএনসিসিকে আইনি নোটিশ

আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে শহীদ তাজউদ্দিন স্মৃতি পার্কটি চুক্তির মাধ্যমে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবকে হস্তান্তর, খেলাধূলার জন্য ভাড়া আদায়ের সুযোগ দেয়া এবং নাগরিকদের ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে আদালতের আদেশ অবমাননা করায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, রাজউকের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিজাউল ইসলাম ও গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের পক্ষে ড. ওয়াহিদুজ্জামানকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে পরিবেশকর্মীরা। আজ পরিবেশবাদীদের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ তাদেরকে এ আইনি নোটিশ পাঠান।

নোটিশ প্রেরণকারীরা হলেন, সংবিধান রিফর্ম কমিশনের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, সিএলপিএ এর সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহবুবুল আলম, নগর পরিকল্পনাবীদ অধ্যাপক ড. আদিল মাহমুদ খান, পরিবেশকর্মী আমিরুল রাজিব ও তেতুল তলা মাঠ রক্ষা কমিটির সমন্বয়কারী সৈয়দা রত্না।

পরিবেশবাদীদের অভিযোগ করে বলেন, শহীদ তাজউদ্দিন স্মৃতি পার্ক (পূর্ববর্তী গুলশান সেন্ট্রাল পার্ক) অবৈধভাবে হস্তান্তরের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের ৩ টি রীটের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে ডিএনসিসি। চুক্তি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ডিএনসিসি ও গুলশান ইয়ুথ ক্লাব আদালতের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে চুক্তি সম্পাদন করেছে। চুক্তিটি মাঠ, পার্ক, জলাধার আইন ২০০০ আইন এবং রাজউকের সাথে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের চুক্তির শর্ত-এর লঙ্ঘন, ডিএনসিসি সিটি কর্পোরেশন আইন ২০০৯ এর ধারা ৮০ (১) (গ) লঙ্ঘন করেছে। পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, সরকারি সম্পত্তি একটি বেসরকারী ক্লাবের লাভ এবং আয়ের জন্য তুলে দিতে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। ডিএনসিসি কর্তৃক এ ধরনের অবৈধ চুক্তি শুধু আইনের লঙ্ঘন নয়, এ ধরনের চুক্তি দুর্নীতি দমন আইনের তফসিলভুক্ত একটি অপরাধ।

উল্লেখ্য যে,  গুলশান ইয়ুথ ক্লাব বনাম রাজউকের রীট মামলায় (Writ Petition No. 2891 of 2013) গুলশান ইয়ুথ ক্লাব ৩১ আগষ্ট ২০২২ এ হেরে যায়। এ রীট মামলায় আদালত নির্দেশ দেয় ‘‘the respondent No. 3 is directed to demolish all unauthorised structures from the Plot No. 130A, Gulshan Avenue, Dhaka to restore the character of the park and protect the same”। গুলশান ইয়ুথ ক্লাব এই তথ্য গোপন করে ০৬ মার্চ ২০২৪ সালে ডিএনসিসি-র সাথে এই চুক্তি করে। যা অবৈধ এবং দুর্নীতির সামিল।

পরিবেশকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ডিএনসিসি-র প্রশাসকসহ চেয়ারম্যান রাজউক, গণপুর্ত উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এবং পরিবেশ উপদেষ্টাকে আহবান জানালেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।