কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ধাক্কায় এখনো স্বাভাবিক হয়নি শাহজালাল বিমানবন্দর

ফ্লাইট বিলম্ব ও যাত্রীদের ভোগান্তি অব্যাহত, ট্রানজিট যাত্রীরা চরম বিড়ম্বনায়
শনিবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিমান চলাচল স্বাভাবিক হলেও এখনো এর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। রোববার সকাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফ্লাইট ছাড়তে হয়েছে বিলম্বে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বিদেশগামী যাত্রীরা। বিশেষ করে ট্রানজিট যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতের শিডিউলে থাকা বহু ফ্লাইট ছাড়তে হয়েছে রোববার সকালে। কোনো কোনো ফ্লাইট ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত। শুধু রাতের ফ্লাইট নয়, রোববার সকালে নির্ধারিত ফ্লাইটগুলোও ছাড়তে হচ্ছে দুই থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে।
এদিকে, দীর্ঘ অপেক্ষায় টার্মিনালে আটকে থাকা যাত্রীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ লক্ষ করা গেছে। বিশেষত যেসব যাত্রী অন্য দেশে ট্রানজিটের জন্য ঢাকা থেকে ফ্লাইট নিয়েছিলেন, তারা সংযোগ ফ্লাইট মিস করার আশঙ্কায় চরম উদ্বিগ্ন।


যেভাবে ঘটেছে অগ্নিকাণ্ড
শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন লাগে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। দুর্গম স্থানে বিশাল অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা দেয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। প্রায় সাত ঘণ্টার নিরলস প্রচেষ্টার পর রাত সোয়া ৯টার দিকে অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আগুন লাগার কারণে টানা সাত ঘণ্টা বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়। এ সময় আকাশে থাকা কয়েকটি ফ্লাইট জরুরি ভিত্তিতে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করতে বাধ্য হয়। রাত ৯টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে পুনরায় বিমান চলাচল শুরু হয়।


গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি
এই মর্মান্তিক ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যাকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি অর্থ মন্ত্রণালয়ও একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি কার্গো সেকশনের সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং আর্থিক প্রভাব মূল্যায়নের দায়িত্ব পালন করবে।
এদিকে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যথাসম্ভব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে। তবে কার্গো সেকশনের ক্ষতির পরিমাণ বড় হওয়ায় পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।