ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ‘রোড ক্র্যাশের অন্যতম ঝুঁকি গতি’ বিষয়ে কর্মশালা
১৫ অক্টোবর ২০২৫, ঢাকা ।
সড়কে নানা কারণে মানুষ মারা যায়। তন্মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ যান ও অদক্ষ চালক, বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যান একসঙ্গে চলাচল, লেন না মানা, যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা, রাতের বেলায় সড়কে পর্যাপ্ত আলোর অভাব, ট্রাফিক আইন ও ট্রাফিক সিগনাল অমান্য করা, অনিরাপদ রোড ডিজাইন এবং অতিরিক্ত গতি বা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসাবে চিহ্নিত। বিশেষ করে, অতিরিক্ত গতি বা বেপরোয়া গতি রোড ক্র্যাশ ও সড়কে অকালমৃত্যু ও পঙ্গুত্বের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। তাই, সড়ক ও গাড়ির ধরণ অনুযায়ী যে গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে তা মেনে গাড়ি চালালে রোড ক্র্যাশের ঝুঁকি কমে আসবে। অর্থাৎ গতিসীমা মানলে জীবন বাঁচবে। এছাড়া নিরাপদ যান ও নিরাপদ রোড ডিজাইন এবং ট্রাফিক সিগনালসহ আইন মেনে চললে সড়ক নিরাপদ হবে।

১৫ অক্টোবর ২০২৫ সকালে ঢাকার একটি হোটেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কর্মকর্তাদের ‘রোড ক্র্যাশের অন্যতম ঝুঁকি গতি’ শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার এসএম সাজ্জাত আলী, এনডিসি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএমপি’র অতি. পুলিশ কমিশনার (এডমিন) মো. সারওয়ার (বিপিএম-সেবা), অতি. পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ড. মো. জিল্লুর রহমান ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম। বিআইজিআরএস কোঅর্ডিনেটর ও অতিরিক্ত সচিব (অব.) মো. আবদুল ওয়াদুদ এর সভাপতিত্বে জিআরএসপি’র সিনিয়র রোড পুলিশিং উপদেষ্টা মাইকেল ফিল্যান্ড ও পল সিমকক্স এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকায় গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সদস্যদের দক্ষতাবৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে, গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টনারশিপ (জিআরএসপি) এ প্রশিক্ষণ আয়োজন করে। এ প্রশিক্ষণে ডিএমপি’র বিভিন্ন ইউনিটের ট্রাফিক সার্জেন্ট, উপ-পরিদর্শক, পুলিশ পরিদর্শক, সহকারী/উপ-পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার ৩০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। জিআরএসপি’র সি. রোড পুলিশিং উপদেষ্টা মাইকেল ফিল্যান্ড ও পল সিমকক্স প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন। এতে তারা রোড ক্র্যাশ প্রতিরোধে আইন প্রয়োগের ভূমিকা, ক্র্যাশের ক্ষেত্রে যানবাহনের উচ্চ গতির ভূমিকা, গতি নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব, গতি নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি ও কৌশল এবং রাস্তার পাশের চেকপয়েন্টগুলির নিরাপদ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির উপর আলোচনা করেন। এ সময় তারা গতির কারণে বিভিন্ন ঝুঁকি অডিওভিজ্যুয়াল চিত্র, গ্রাফ ও বিভিন্ন দেশের গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, দেশে রোড ক্র্যাশে মৃত্যু ও হতাহত কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনস কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) দেশের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন ভেদে সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে এক্সপ্রেসওয়ে, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি হবে ৪০ কিমি/ঘণ্টা, ও অন্যান্য অধিকাংশ সড়কে ৩০ কি.মি./ঘন্টা নির্ধারণ করেছে। তবে, শহরে মোটর সাইকেলের সর্বোচ্চ গতি ৩০ কি.মি./ঘন্টা।
দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ সমন্বয় করেন বিআইজিআরএস-ঢাকা ইনিশিয়েটিভ কোঅর্ডিনেটর মো. আবদুল ওয়াদুদ ও এনফোর্সমেন্ট কো-অর্ডিনেটর গোলাম হোসেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর টেকনিক্যাল এডভাইজর আমিনুল ইসলাম সুজন, ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট এর কনসালটেন্ট ফারজানা ইসলাম তমা, বিআইজিআরএস এর ট্রান্সপোর্ট কোর্ডিনেটর রেজাউর রহমান ও সার্ভিলেন্স কোঅর্ডিনেটর ডা. তানভীর ইবনে আলী প্রমুখ।
দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র অতি. পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ড. মো. জিল্লুর রহমান। তিনি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন। এ সময় ডিএমপি’র যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-ঢাকা উত্তর) সুফিয়ান আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।