ভাইরাল জ্বরের সময় কী খাবেন
ভাইরাল জ্বরে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, তাই খাবার হতে হবে সহজপাচ্য, পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং শরীরের চাহিদা অনুযায়ী। সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার এই সময়ে শরীরকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং দ্রুত আরোগ্য লাভ নিশ্চিত করে। চলুন দিনাজপুরের রাইয়ান হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের পুষ্টিবিদ লিনা আকতারের কাছ থেকে জেনে নিই ভাইরাল জ্বর হলে কী খাবেন আর খাবেন না ।
নিচে কিছু উপযোগী খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:
তরল খাবার ও পর্যাপ্ত পানি:
গরম পানি, লেবু পানি, ডাবের পানি, ইলেকট্রোলাইট (ওআরএস), চিকেন বা সবজি স্যুপ।
এগুলো শরীরে পানিশূন্যতা রোধ করে এবং শক্তি যোগায়।
সহজপাচ্য ও হালকা খাবার:
সেদ্ধ ভাত ও ডাল, খিচুড়ি, সেদ্ধ আলু, হালকা ভেজানো রুটি, সেদ্ধ সবজি।
এগুলো হজমে সহজ এবং ক্লান্ত শরীরের জন্য উপযুক্ত।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার:
সেদ্ধ ডিম বা হালকা পোচ, চিকেন স্যুপ, পনির, টক দই।
এগুলো শরীর মেরামতে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত ফল:
কমলা, মাল্টা, লেবু, পাকা পেপে, আমলকী, কলা, বেদানা।
এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখে।
টক দই ও প্রোবায়োটিক খাবার:
হজমশক্তি বাড়ায় এবং পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
ভাইরাল জ্বরে কী খাবেন না
ভুল খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। নিচে এমন কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যা এই সময় এড়িয়ে চলা উচিত:
ভাজা-পোড়া ও তেলচর্বিযুক্ত খাবার:
পরোটা, পেঁয়াজু, চপ, ফাস্টফুড।
এগুলো হজমে সমস্যা করে এবং বমি বা গ্যাসের ঝুঁকি বাড়ায়।
ঠান্ডা খাবার ও পানীয়:
আইসক্রিম, ঠান্ডা পানি, কোল্ড ড্রিংক।
এগুলো কাশি ও গলা ব্যথা বাড়াতে পারে।
ঝাল-মসলাযুক্ত খাবার:
বিরিয়ানি, ঝাল ভুনা, আচার।
এগুলো পাকস্থলীতে অস্বস্তি ও সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
চা-কফি ও ক্যাফেইনজাতীয় পানীয়:
এগুলো অতিরিক্ত খেলে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি করতে পারে।
ঘরোয়া উপকারী টিপস
গলা ব্যথা কমাতে: লবণ-পানি দিয়ে গার্গল করুন।
উপকারী পানীয়: আদা-লেবু বা তুলসী পাতার হালকা চা পান করুন।
বিশ্রাম: পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম এই সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ভাইরাল জ্বরে শুধু ওষুধই নয়, সঠিক পুষ্টি ও বিশ্রামও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার শরীরকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং দ্রুত আরোগ্য নিশ্চিত করে। অপ্রয়োজনীয় বা ভুল খাবার এড়িয়ে চললে শরীরের ক্ষতির ঝুঁকি কমে। তাই এই সময় সচেতন থাকুন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।