টরন্টোর পিয়ারসন বিমানবন্দর থেকে শহরে গেলে একজন উবারচালক ভালোই আয় করতে পারেন। কিন্তু ১৯ সেপ্টেম্বর সাচিনদীপ সিংয়ের ভাগ্যটাই খারাপ ছিল। কয়েক মাইল যাওয়ার পরই তাঁর উবার অ্যাপ কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
ওই দিন মধ্যরাতেই সাচিনদীপ সিংয়ের কাজের অনুমতি শেষ হয়ে যায়। কানাডার কর্তৃপক্ষ যেমন তাঁকে নোটিশ দিয়েছিল, উবারও তেমনি তাঁকে নোটিশ দিয়ে দেয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত থেকে ২৩ বছর বয়স্ক সাচিনদীপ সিং কানাডায় এসেছিলেন শিক্ষার্থী ভিসায়। এখন তাঁর বয়স ২৩। যে ভিসায় তিনি এসেছিলেন, তার আওতায় তিনি কাজ খোঁজার সুযোগ পেয়েছেন। কাজ পেলে স্থায়ীভাবে থাকারও সুযোগ আছে। ‘পড়াশোনা-কাজ-বসবাস’ নামে এ অভিবাসনসুবিধা পরিচিত।
কিন্তু অর্থনীতি চাঙা করতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লাখ লাখ মানুষকে কানাডায় স্বাগত জানিয়ে সরকার এখন নতুন পথে হাঁটতে চাইছে। দেশটিতে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, এই অভিবাসন বিভিন্ন ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে আবাসন, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতে নতুন অভিবাসীদের জন্য সুযোগ-সুবিধার সংস্থান রাখতে হচ্ছে।
কানাডায় অস্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি–সংক্রান্ত যে বিশাল কর্মসূচি রয়েছে, চলতি বছর তাতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে সাচিনদীপ সিংয়ের মতো হাজারো অভিবাসী আইনি ঝামেলায় পড়ে গেছে।
নীতিতে পরিবর্তন
কানাডায় স্থায়ী হওয়ার একটি পথ ছিল শিক্ষার্থী হিসেবে এসে গ্র্যাজুয়েশনের পর কাজ খুঁজে নেওয়া। অন্য একটি পথ হলো চাকরি নিয়ে দেশটিতে আসা। এই দুই পথেই সবচেয়ে বেশি অভিবাসী কানাডায় এসেছেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তাঁরা স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পেয়েছেন। আর সর্বশেষ পথটি হলো আশ্রয়প্রার্থী হয়ে দেশটিতে থাকা।
করোনাভাইরাস মহামারির পর কানাডায় শ্রমিকসংকটের কারণে দেশটির কর্তৃপক্ষ অভিবাসীদের অস্থায়ীভাবে দেশটিতে থাকার অনুমতি দেয়। দেশটিতে যে ৩০ লাখ মানুষের কোনো না কোনো ধরনের অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি আছে, তাদের ২২ লাখই এসেছেন গত দুই বছরে। কানাডার জনসংখ্যা ৪ কোটি ১৩ লাখ। এর ৬ দশমিক ৮ শতাংশই অস্থায়ী বসবাসকারী, যে হার ২০২২ সালে ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।