জাতিসংঘে দুই রাষ্ট্র সমাধানে বিপুল সমর্থন — বাংলাদেশসহ ১৪২ দেশের ভোটে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে জোরালো গতি

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটের দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান নিয়ে গৃহীত প্রস্তাবে বাংলাদেশসহ ১৪২ দেশ বিপুল সমর্থন জানিয়েছে। শুক্রবারের এই ভোটে প্রস্তাবের পক্ষে দাঁড়ানো দেশগুলো মনে করছে—এটি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির পথে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একইসঙ্গে হামাসকে সব জিম্মি মুক্ত করার আহ্বান জানানো হয় এবং ৭ অক্টোবরের বেসামরিক হামলার নিন্দা জানানো হয়। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সমষ্টিগত পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জোর দিয়ে বলা হয়।

সৌদি আরবের প্রতিক্রিয়া
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই প্রস্তাব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকারের প্রতি সুস্পষ্ট সমর্থন। তাদের মতে, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের দাবি এখন আরও জোরালো হয়েছে।

ফিলিস্তিনের প্রতিক্রিয়া
ফিলিস্তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হুসেইন আল-শেখ এ সিদ্ধান্তকে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “এটি আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে একটি মাইলফলক।” আরব লীগও ইতিমধ্যে ঘোষণাটিকে সমর্থন জানিয়েছে।

ইসরাইলের অবস্থান
অন্যদিকে ইসরাইল এ প্রস্তাবকে ‘লজ্জাজনক’ বলেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমরস্টেইন অভিযোগ করেন, জাতিসংঘ বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং প্রস্তাবটি শান্তি নয়, বরং হামাসকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করছে।

পরবর্তী পদক্ষেপ
এই ভোটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আবারও জোরালোভাবে ফিরে এলো দুই রাষ্ট্র সমাধান। ফ্রান্স, সৌদি আরব ও তাদের অংশীদার দেশগুলো শিগগিরই নিউইয়র্কে বসতে যাচ্ছে, যেখানে দুই রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের পথ খুঁজে বের করা হবে।

বিশ্ব রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে, জাতিসংঘের এ সিদ্ধান্ত ইতিহাসে নতুন দিকনির্দেশনা দিতে পারে। তবে বাস্তবে মাঠপর্যায়ে এর কার্যকারিতা কতটা হবে, সেটিই এখন মূল প্রশ্ন।