তিস্তার পানিতে লালমনিরহাটের ২৫ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দী ১০ হাজার মানুষ

বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটে খুলে দেয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট। এতে জেলার ১৮টি ইউনিয়নের অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার।

বুধবার সকাল থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির কারণে ব্যারেজ রক্ষায় কর্তৃপক্ষ সব গেট খুলে দেয়। ফলে মুহূর্তের মধ্যে নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলো তলিয়ে যায়। অনেক পরিবার নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য বাহনে করে উঁচু স্থানে চলে যায়। কেউ কেউ আশপাশের স্কুল-কলেজের মাঠ ও সরকারি ভবনে আশ্রয় নিয়েছে।

দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। সরকারিভাবে প্রথম দফায় কিছু ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন দুর্গতরা। বিশেষ করে শিশু খাদ্য, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির চাহিদা বেশি।

প্লাবিত গ্রামের মধ্যে রয়েছে—মহিষখোচা, কালমাটি, গোবরধন, খুনিয়াগাছ, রাজপুর, তাজপুর, গোখুন্ডা, চর গোকোন্ডা, হাতীবান্ধা, পারুলিয়া, সানিয়াজান, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, দহগ্রামসহ একাধিক এলাকা। এসব গ্রামে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে গেছে। রোপা আমন ক্ষেত, বীজতলা, সবজি ক্ষেত ও অন্যান্য ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট তীব্র হয়েছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং এলাকায় টানা বর্ষণের কারণে গজলডোবা ব্যারেজের সব গেট খুলে দেয়া হয়েছে। এতে তিস্তা ব্যারেজে পানির চাপ বেড়ে গিয়ে সব গেট খুলতে হয়েছে। তিনি জানান, আগামী দুই দিন পানির প্রবাহ বাড়বে, তবে চার থেকে পাঁচ দিন পর ধীরে ধীরে পানি নামতে শুরু করবে।

জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে। যেকোনো সময় দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ শুরু হবে।

Share This News